বর্তমান ডিজিটাল যুগে আপনার যদি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকে। আপনি সেই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে বিজনেস বা অ্যাড প্রকাশ করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আমাদের দেশে জাদেরই ওয়েবসাইট আছে প্রায় ৯৫ ভাগ লোকেরই একটি প্রবলেম। আর টা হলো তাঁর সাইট এ ভিজিটর নাই। তাঁর ইনকাম কম বা নাই। তাহলে এখন আমাদের সামনে একটাই প্রশ্ন আর সেটা হলো ওয়েবসাইট এর ভিজিটর কি করে বাড়ানো যায়।
আমাদের সকলের একটা কমন সমস্যা হছে আমাদের ওয়েবসাইট এ ভিজিটর কম। হোক সেটা ব্লগ ওয়েবসাইট, অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট বা কমার্শিয়াল ওয়েবসাইট। আর ওয়েবসাইট এ যদি ভিজিটর না আসে তবে সেই ওয়েবসাইট হয়ে যায় মূল্যহীন। কারন আপনি ওয়েবসাইট এর মাধমে কোন প্রোডাক্ট বিক্রি করুন বা কোন সার্ভিস অথবা গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধমে ইনকাম করুন না কেন। আপনার ওয়েবসাইট এ যদি ভিজিটর না আসে তাহলে আপনার ইনকামও হবে না। তাই যে কোন ওয়েবসাইট এর প্রান হোল ভিজিটর। আজকে আমরা জানব কি ভাবে এই ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট এ আনবেন। চলুন শুরু করি।
ওয়েবসাইট এর ভিজিটর কি?
আমরা অনেকেই হয়তো ওয়েবসাইট এর ট্রাফিক শব্দটা নিয়ে কনফিউশন এ পড়ি। ওয়েবসাইট এর ভিজিটর কেই মুলত ট্রাফিক বলা হয়ে থাকে। যে সকল মানুষ আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য তাদের কেই ওয়েবসাইট ট্রাফিক বা ভিজিটর বলা হয়ে থাকে। ধরুন আপনি একটি ফোন কিনবেন বলে একটি ই- কমার্স ওয়েবসাইট এ ঢুকলেন তার পর আপনার পছন্দের ফোন টা সিলেক্ট করে কিনলেন বা না কিনে সুধু বিভিন্ন ফোন এর দাম দেখলেন। এই ক্ষেত্রে আপনি উক্ত ওয়েবসাইট এর একজন ভিজিটর হিসাবে গণ্য হবেন। ওয়েবসাইট এ ভিজিটর আসার জন্য আপনার ওয়েবসাইট টা অবশই গুগল এর প্রথম পেজ এ রাঙ্ক করতে হবে।
আপনি কি করে আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটর বাড়াবেন ?
যে কোন ওয়েবসাইট এর ভিজিটর হোল উক্ত ওয়েবসাইট এর প্রান স্বরূপ। একজন মানুষ এর মাঝে যদি প্রান না থাকে সেই মানুষ টা যেমন মূল্য হীন ঠিক তেমনি একটি ওয়েবসাইট এর ভিজিটর না থাকলে সেই ওয়েবসাইট ও মূল্য হীন। আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে কোন পণ্যই বিক্রি করুন বা গুগল অ্যাডসেন্স এর মাঝেই অর্থ উপার্জন করুন না কেন সকল ক্ষেত্রেই ওয়েবসাইট এর ভিজিটর এর গুরুত্ত অপরিসীম। তাই সকলেই চায় তার ওয়েবসাইট এ যেন প্রচুর পরিমান ভিজিটর আসে। আর আজকে সেই কাংখিত ভিজিটর কি করে আপনার ওয়েবসাইট এ আনবেন সেটাই আলোচনা করব।
১| ইম্পরট্যান্ট কন্টেন্ট/পণ্য
বিল গেটস একটি সম্মেলন এ বলেছিলেন কন্টেন্ট ইজ কিং। যত দিন যাচ্ছে ভাল ভাল কন্টেন্ট এর চাহিদাও ততোই বাড়ছে। তাই আপনি যদি চান আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিতর বাড়াতে তাহলে ভাল ভাল কন্টেন্ট পাবলিশ করেন। যাতে আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটর রা বার বার আপনার ওয়েবসাইট এ ফিরে আসেন। কারন একটি ওয়েবসাইট এর ভিজিটর বাড়াতে মুখ্য ভুমিকা পালন করে থাকে সেই ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট।
২। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
এস ই ও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ও যে কোন ওয়েবসাইট এর ভিজিটর বাড়াতে খুবি গুরুতপুরন ভুমিকা পালন করে থাকে। যদিও অনেক গুলো সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে কিন্তু তার মধে সবার থেকে ভাল হলো গুগল। আপনি যদি গুগল এর অ্যালগোরিদম মেনে আপনার কন্টেন্ট পাবলিশ করেন। তাহলে দেখবেন খুব তারা তারি আপনার ওয়েবসাইট গুগল এর প্রথম পেজ এ রাঙ্ক করবে। আর যদি আপনার ওয়েবসাইট টা গুগল এর প্রথম পেজ এ রাঙ্ক করে তাহলে দেকবেন প্রতি দিন আপনার ওয়েবসাইট এ বিপুল পরিমান ভিজিটর আসবে অটোমেটিকালি। আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য কি ভাবে এস ই ও করবেন নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো
ক) আপনাকে এসইও করার জন্য প্রথমে কীওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। কীওয়ার্ড হলো এমন একটি শব্দ যা লিখে পাঠক বা ভিজিটর আপনার পেজে আসবে। মানে হলো ধরে নিলাম আপনার ওয়েবসাইট এ একটি আর্টিকেল আছে সেটা হলো কিভাবে আপনি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন এই বিষয়ে। এখন যারা এই বিষয় সম্পর্কে জানতে চান। তারা কি লিখে গুগল এ সার্চ করতে পারে, যেমন অনলাইন আরনিং, কি ভাবে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা যায়, কি ভাবে আমি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করতে পারব ইত্যাদি এই সব হলো কীওয়ার্ড। আর আপনাকে প্রথমেই কীওয়ার্ড রিসার্চ করে নিতে হবে আপনার পোস্ট এর জন্য।
খ) আপনাকে কোন কিছু পোস্ট করার সময়েই কিছু অন পেইজ এসইও করে নিতে হবে। তাহলে আপনার আর্টিকেল টি খুব দ্রুতই গুগল এর সার্চ ইঞ্জিন এ রাঙ্ক করবে। কি কি অন পেইজ এসইও করতে হবে। যেমন- কীওয়ার্ড এর সাথে মিল রেখে টাইটেল লিখতে হবে, কিছু ট্যাগ দিতে হবে, পোস্ট এর জন্য মেটা ডিসক্রিপশন লিখতে হবে, আপনার পোস্ট এ কীওয়ার্ড ভালো ভাবে ব্যাবহার করতে হবে ইত্যাদি।
গ) আপনাকে অবশই অফ পেইজ এসইও করতে হবে যদি আপনি চান আপনার পেইজ গুগল এর সার্চ ইঞ্জিন এ রাঙ্ক করুক।

ঘ) আরও একটা মোস্ট গুরুত্ত পূর্ণ বিষয় হলো আপনার ওয়েবসাইট ১০০% লোড হতে কত সময় লাগে। আপনার ওয়েবসাইট মোবাইল ফ্রেন্ডলি হতে হবে। কারণ এখন মোবাইল ফোন এ ইন্টারনেট ব্যাবহার কারীর সংখাও কম নয়।
আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর পোস্ট এ যে ছবি ব্যাবহার করছেন। সেটার সাইজ যেন অনেক বড় না হয়। কারন বিগ সাইজ এর ফটো আপলোড করলে ওয়েবসাইট লোড হতে অনেক বেশি সময় লাগে। আর যদি আপনার ওয়েবসাইট টি দ্রুত লোড না হয় তবে ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট এ আসলেও বেশি সময় থাকবে না। তাই আপনার ওয়েবসাইট টি ভালো করে অপটিমাইজ করুন যেন খুব তারাতারি লোড হয়।
৩। গেস্ট ব্লগিংঃ
আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর ব্যাক লিংক তৈরির জন্য বিভিন্ন টেক ওয়েবসাইট এ গিয়ে ব্লগ পোস্ট করতে পারেন আর পোস্ট এর নিচে আপনার ওয়েবসাইট এর লিংক শেয়ার করতে পারেন। এর মাধমেও আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটর পাবেন। আর এই ব্যাক লিংক আমার ওয়েবসাইট এর এসইও রাঙ্ক বাড়াতেও সাহায্য করবে।
৪। প্রিমিয়াম থিম / ডিজাইন
আপনার ওয়েবসাইট টা অবসই খুব সুন্দর করে ডিজাইন করা থাকতে হবে। তা না হলে ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট ভিজিত করলেও বেশি সময় থাকবে না। তাই আপনার ওয়েবসাইট টা
প্রিমিয়াম ডিজাইন এর হতে হবে বা আপনি চাইলে প্রিমিয়াম একটা থিম ও কিনে নিতে পারেন। আপনি চাইলে কোন প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইনার কে দিয়েও আপনার ওয়েবসাইট টি ডিজাইন করে নিতে পারেন।
৫। সোশ্যাল মিডিয়া
আপনার পেজ এর সাথে মিল রেখে আপনাকে বিভিন্ন সোশ্যাল মিদিয়াও ব্যাবহার করতে হবে। যেমন – ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, লিঙ্কইন ইতাদি। এই সকল সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও বর্তমানে প্রছুর পরিমান ভিজিটর আসে ওয়েবসাইট এ। আপনি ফেসবুক গ্রুপ ও ব্যাবহার করতে পারেন। আপনি কোন সোশ্যাল মিডিয়াতে কি ভাবে কাজ করবেন তা নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
ক) আপনি ফেসবুক পেইজ খুলে প্রতিদিন পোস্ট করতে পারেন। সাথে একটি ফেসবুক গ্রুপ ও খুলতে পারেন।
খ) ইউটিউব এ বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতে পারেন।
গ) আপনি একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। সেখানে আপনার পোস্ট এর বিভিন্ন ইমেজ শেয়ার করতে পারেন।
৬। ফোরাম পোস্টিং ঃ
আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য বিভিন্ন ফোরাম এ যুক্ত হবেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিবেন। তাহলে দেখবেন সেখান থেকেও ভালো পরিমান ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট এ আসবে। আপনি এই খানে আপনার টার্গেট আদিয়েন্স পাবেন।
৭। ইমেইল মার্কেটিং ঃ
আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য ইমাইল মার্কেটিং করতে পারেন। যদিও ইমেইল মার্কেটিং অনেক পুরনো একটি মার্কেটিং পদ্ধতি তাঁর পরেও আজ এইটা অনেক কাজ করে। ইমেইল মার্কেটিং করতে গেলে আপনার কাছে ইমেইল থাকতে হবে। আপনি বিভিন্ন উপায়ে ইমেইল সংগ্রহ করতে পারেন। যেমন- আপনার ওয়েবসাইট এ একটি পোপ আপ বানাতে পারেন যার মাধ্যমে ইমেইল সংগ্রহ করবেন। আপনি কোন পিডিএফ ফ্রি তে দিয়ে দিতে পারেন এর মাধমেও ইমেইল পাবেন। আপনি এ ছারাও ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে ইমেইল সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। পড়ে আপনি ইমেইল মার্কেটিং করতে পারবেন।
৮। নিয়মিত পোস্ট করুন
আপনাকে প্রিতিনিয়তই পোস্ট করতে হবে এবং আপডেট বিষয়ে পোস্ট করতে হবে। আপনি যদি রেগুলার পোস্ট না করেন তবে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটর হারাবেন । সাথে সাথে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর গুগল সার্চ ইঞ্জিন রাঙ্কও হারাবেন।
৯। অ্যাড দিন ঃ
আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইট এর রাঙ্ক বারানর জন্য কিংবা সবার কাছে আপনার ওয়েবসাইট টা তুলে ধরার জন্য আপনি অনলাইন এ বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। আপনি মূলত দুইতা মাধ্যমে এই অনলাইন বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। নিচে সেগুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে আলো চনা করা হলো
ক) গুগল অ্যাড ঃ আপনি চাইলে গুগল এর মাধ্যমে অ্যাড দিয়েও আপনার ওয়েবসাইট এ ভিজিটর নিয়ে আসতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে আগে ঠিক করে দিতে হবে যে এই বিজ্ঞাপন আপনি কোন দেশের লোকজন কে দেখাতে চান, কোন ভাষার লোকজন এই অ্যাড দেখবে, আপনি কি কোন ছেলে কে দেখাতে চান আপনার বিজ্ঞাপন নাকি কোন মেয়েকে নাকি দুজন কেই। এর পড়ে আপনি কোন বয়সের লকদের কাছে আপনার বিজ্ঞাপনটি দেখাতে চান। কোন সময় সেই অ্যাড টা সবার কাছে যাবে সেতাও আপনি নির্বাচন করে দিতে পারবেন। এই সব কিছুর উপর ভিত্তি করে গুগল আপনাকে চার্জ করবে।

খ ) ফেসবুক অ্যাডঃ আপনি গুগল অ্যাড এর সাথে সাথে ফেসবুক এর মাধমেও আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য অ্যাড দিতে পারেন। কারন এখন ফেসবুক ব্যাবহার করে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য টার্গেটড ভিজিটর পাবেন ফেসবুক এ । র অ্যাড দেয়ার সিস্টেম অনেক্তাই গুগল অ্যাড এর মতই। তবে হা আপনাকে বিজ্ঞাপন এর টাকা প্রদান করতে হবে ডলার এর মাধ্যমে।
১০। ইউজার ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট ঃ
আপনার সাইট টা অবশই ইউজার ফ্রেন্ডলি হতে হবে। ইউজার বা ভিজিটর রা যেন খুব সহজেই সাইট টা ব্যাবহার করতে পারে। দ্রুত লোডিং জেন হয়, ভালো মানের ডিজাইন করতে হবে। সহজ ন্যাভিগেশন দিতে হবে। সহজ কথা হলো ভিজিটর শুধু ওয়েবসাইট এ আসলেই আপনার কাজ শেষ নয়। আপনাকে সকল ভিজিটর কে ধরে রাখতে হবে আপনার ওয়েবসাইট এ এবং তারা জেন বার বার আপনার সাইট ভিজিট করে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
পরিশেষে বলা জায় যে, ওয়েবসাইট এ ভিজিটর আনা মটেও সহজ কোন কাজ নয়। আর থেকেও কঠিন কাজ হলো সেই ভিজিটর ওয়েবসাইট এ ধরে রাখা। আপনি চাইলে উপরুক্ত উপায় এ আপনি খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটর বাড়াতে পারবেন একদম অরগানিক ভাবে। তাহলে আর দেরি কেন আজকেই আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটর বারিয়ে আপনার আয় বারিয়ে নিন। আর যদি এই বিসয় আ কোন কিছু জানার থাকে তাহলে অবশই কমেন্ট এ জানাতে ভুলবেন না। আজকে এখানেই শেষ করছি দেখা হবে পরের আর্টিকেলএ সে পর্যন্ত সকলেই ভাল থাকুন।